• সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:১৪ অপরাহ্ন
Headline
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ মুন্সিগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি গঠন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করলেন এ্যাড.অন্তরা সেলিমা হুদা শ্রীনগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্টি দুর্যোগে সম্পদ নষ্ট ও জীবনহানির ঘটনা ঘটে…ইউএনও একি মিত্র চাকমা বিরামপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত আমরা কোন রকম ধর্মীয় গোঁড়ামি বরদাশ্ত করবো না… ড. মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন দুইদিন পর ভেসে উঠল মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মুন্সিগঞ্জ শ্রীনগরে বৃদ্ধাকে কুপিয়ে যখম মতলব উত্তরে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন বিএনপি নেতা ডা. শামীম সরকার সব ধর্মের মানুষ আমরা এক পরিবারের মত : তানভীর হুদা

দেশের হয়ে পদক জেতার স্বপ্ন শিশু তাইয়েবার

Lovelu / ২১৭ Time View
Update : শনিবার, ৬ আগস্ট, ২০২২

ডেস্ক নিউজঃ

বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা বুকে ধারণ করে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া আসরে ধারাবাহিক অংশ নিচ্ছেন প্রবাসী খেলোয়াড়রা। আমেরিকা প্রবাসী জিমন্যাস্ট সাইক সিজার, লন্ডন প্রবাসী সাঁতারু জুনাইনা আহমেদ, ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ড প্রবাসী ফুটবলার যথাক্রমে জামাল ভূঁইয়া এবং তারিক কাজীর পর এই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন নিউজিল্যান্ড প্রবাসী জিমন্যাস্ট আলী কাদের হক ও লন্ডন প্রবাসী অ্যাথলেট ইমরানুর রহমান। এ দুইজন চলমান বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমসে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে দেশের পক্ষে নিজ নিজ ইভেন্টে অংশ নিলেও সাফল্য পাননি। তবে ভবিষ্যতে দেশকে ভালো কিছু উপহার দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এদের পথ অনুসরণ করে এবার দেশের হয়ে খেলতে চায় বার্মিংহাম প্রবাসী ৫ বছরের শিশু তাইয়েবা রহমান। আন্তর্জাতিক আসরের জিমন্যাস্টিক্সে বাংলাদেশের হয়ে খেলে পদক জেতাই এখন স্বপ্ন ছোট্ট এই শিশুটির।

বার্মিংহামে প্রথম শ্রেণীতে পড়–য়া তাইয়েবার বাবার নাম মোশারফ হোসেন, মায়ের নাম আশরাফি আরা আনিকা। ওরা দুই বোন ও এক ভাই। বড় বোনের নাম তাসকিন রহমান এবং বড় ভাই মুসা রহমান। তাসকিন দশম শ্রেণীর ছাত্রী, মুসা পড়ে তৃতীয় শ্রেণীতে। তাইয়েবার নানা বাড়ি ঢাকার হাজারিবাগে এবং দাদা বাড়ি শরিয়তপুর হলেও ঢাকার বাসাবো এলাকায় জন্ম তার বাবা মোশারফের। সেখানেই বেড়ে ওঠেন তিনি। মোশারফ দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ ছিলেন ইতালিতে। তিনি ১৯৯৭ থেকে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছিলেন নর্দান ইতালির রাজধানী ভেনিসে। ইউরোপের নাগরিকত্ব পাওয়ায় পরিবার নিয়ে সাড়ে ৩ বছর ধরে আছেন বার্মিংহামের হ্যান্সওয়াড এলাকায়। এখানে একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে কাজ করেন তিনি।

ছোট মেয়ে তাইয়েবা রহমানের স্বপ্নপূরণে প্রয়োজনীয় সবই করতে প্রস্তুত আছেন মোশারফ হোসেন ও আশরাফি আরা আনিকা। যদি কখনো দেশ থেকে ডাক আসে এবং মেয়েকে দেশের হয়ে কোনো আন্তর্জাতিক আসরে খেলার সুযোগ দেয়া হয় তবে অবশ্যই মোশারফ সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে শনিবার তিনি বলেন,‘আমার ছোট মেয়ে তাইয়েবার বয়স এখন ৫ বছর। সে স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই জিমন্যাস্টিক্স করছে। খেলাধুলার ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষের আগ্রহটাই এখানে বেশি। আমি চাই আমার মেয়ে বাংলাদেশের হয়ে খেলে সুনাম বয়ে আনুক। এ ব্যাপারে আমি সহযোগিতা করবো।’ মোশারফ যোগ করেন,‘বাংলাদেশে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে খেলোয়াড়রা বিশ^মানের হয়ে গড়ে ওঠে না। এখানে খুব ভালো সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়। লেখা-পড়ার পাশাপাশি সপ্তাহে দুইদিন খেলাধুলার উপরে বিশেষ ক্লাস করানো হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষই ছাত্র-ছাত্রী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। তাই বিশ^মানের খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে ওঠা এখানে তেমন কঠিন কাজ নয়। ইচ্ছা থাকলে যে যা চায়, ইউরোপে তাই করা যায়।’

শিশু জিমন্যাস্ট তাইয়েবার বাবা আরো বলেন,‘যদি মেয়েটা দেশের হয়ে খেলতে পারে এটা তো আমাদের জন্য অনেক বড় গর্বের। বলতে পারেন স্বপ্নপূরণও। কারণ আমরা বিদেশে থাকি ঠিকই; কিন্তু আমাদের হৃদয়ে শুধুই বাংলাদেশ।’

কিন্তু ঝামেলা হলো কোনো প্রবাসীকে দেশের হয়ে খেলতে হলে নাগরিকত্ব পরিবতর্ন করতে হয়। তাইয়েবার জন্ম ইতালিতে হওয়ায় তার পাসপোর্টও ইতালির। বাংলাদেশের হয়ে খেলতে হলে আগে বাংলাদেশি পাসপোর্ট করতে হবে তাকে। সেটা নিয়ে অবশ্য কোনো সমস্যা দেখছেন না বাবা মোশাররফ,‘মেয়ে স্কুলে পড়ে। আমরা ওর স্কুলের সঙ্গে কথা বলবো কী করা যায়। প্রয়োজনে আমরা এখানকার ক্লাবেও ওকে ট্রেনির্ং করাবো। আমরা চাই মেয়েটা যেন লাল-সবুজের জার্সি গাঁয়ে জড়ায়।’

ফুটবলার আমির হামজা কিন্তু প্রবাসী বাংলাদেশি। তবে তিনি বর্তমানে খেলছেন ইংলিশ ক্লাব লিস্টার সিটিকে। তাকে বাংলদেশে খেলানো নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। তবে ইংল্যান্ড জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখছেন বলেই হামজা নাগরিকত্ব বদলানো নিয়ে ভাবছেন না। এমনটি কী তাইয়েবার ক্ষেত্রেও হবে। পাশে দা্ড়াঁনো মা আশরাফি আরা আনিকা না বললেন,‘এমনটা কখনোই হবে না। আমার মেয়েটা ইউরোপে জন্মগ্রহণ করেছে এটা ঠিক, কিন্তু আমরা তো বাংলাদেশি। আর দেশের হয়ে খেলতে পারাটা তো অনেক গর্বের। তাইয়েবা যদি দেশের হয়ে খেলতে পারে,তাহলে আমরা তো গবির্ত বাবা-মা হয়ে যাবো।’

ছোট্ট তাইয়েবা শুধু এটুকুই বললো,‘জিমন্যাস্টিক্স খেলে আমি গোল্ড জিততে চাই।’ লাল-সবুজ পতাকা দেখিয়ে তাকে যখন বলা হলো,‘বাংলাদেশের হয়ে খেলবে তো।’ তাইয়েবার উত্তর, ‘ইয়েস’।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category