নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চাঁদপুরে মতলব উত্তরে দুর্বৃত্তদের ছোঁড়া এসিডে ঝলসে মা ও মেয়ের শরীর। এদের মধ্যে মেয়ে মিলি আক্তারের অবস্থা গুরুতর। মিলি আক্তার ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা যায়। তার স্বামী মো. সায়েম প্রবাসে থাকেন। এ ঘটনায় প্রতিবেশী সফিকুল ইসলাম মানিক নামে এক বখাটে যুবকে আটক করা হয়েছে।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় উপজেলার সুজাতপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্বজনরা তাদের দুজনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে তাদের অবস্থার অবনতি দেখা দিলে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, মিলির বিয়ে হওয়ার পূর্বে প্রায়ই তাকে উত্ত্যক্ত করত প্রতিবেশী মোবাইল ফোনে ফ্লেক্সিলোড করা দোকানদার মানিক মিয়া। তার হাত থেকে নিয়ে বাঁচার জন্য মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয়। অন্তঃসত্ত্ব হওয়ার কারণে মিলি আক্তার তার বাপের বাড়িতে চলে আসে। পবিত্র শবে বরাতের রতে সবাই নামাজের জন্য মসজিদে চলে গেলে, সুযোগ বুঝে মানিক মিলির মায়ের নাম ধরে ডাকায়, তার মা রাশেদা আক্তার নামাজে থাকা মিলি দরজা খুললেই শরীরে এসিডে নিক্ষেপ করে। মিলি ডাক চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন দৌড়ে এগিয়ে আসে এবং ঘটনাস্থল থেকে সফিকুল ইসলাম মানিক ধরে আটকে রাখে।
মিলির ভাবি সুমি আক্তার জানান, আমরা অন্য ঘরে নামাজ পরতে ছিলাম। হঠাৎ ডাক চিৎকার শুনে মনে হয়েছিল চোর আসছে। ঘর থেকে বের হয়ে দেখি ফেক্সিলোডের ব্যবসা করে মানিক আমাদের উঠানে দাঁড়িয়ে আমাদের দিকে ইট নিক্ষেপ করা শুরু করেছে। পরে মানিক দ্রুত এখান থেকে চলে যায়। মিলিদের ঘরে দিয়ে গিয়ে দেখি মিলির শরীরে এসিডে নিক্ষেপ করা হয়েছে। তার শরীরের জামা কাপড় পড়ে গেছে। তার মার শরীরের এসিডে পড়েছে।
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জুয়েল জানান, এসিডে মেয়ে মিলি আক্তারের (২০) মুখ, বুক, পিঠ ও ডান হাত এবং মা রাশেদা আক্তারের (৫৫) বাম হাত ও উরু ঝলসে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের দ্রুত ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, এসিড ছুঁড়ে মারার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের পরিচয় জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে রাত ১টায় সফিকুল ইসলাম মানিক নামে এক যুবকের এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ওসি আরও জানান, এ যুবক মিলি আক্তারের বিয়ের আগে তাকে উত্যক্ত করতো। তাই সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করা হয়েছে।