ওমর ফারুক সাইম॥
বিজয়া দশমী পূজার মধ্য দিয়ে বুধবার শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। সকাল ৯টা ৫৭ মিনিট থেকে দশমী বিহিত পূজার লগ্ন শুরু হয়। পূজা শেষে দর্পণ বিসর্জনের মধ্যদিয়ে পূজার ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। এরপর উপজেলার ৩৮টি মন্দিরের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়।
চণ্ডীপাঠ, বোধন এবং দেবীর অধিবাসের মধ্যদিয়ে গত শনিবার থেকে শুরু হয় বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবার দেবী এসেছেন গজে চড়ে, গেছেন নৌকায় চড়ে। এর মধ্যদিয়ে দেবী মর্ত্য ছেড়ে স্বর্গে ফিরেন।
অষ্টমী ও নবমীতে উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন, স্থানীয় সাংসদ ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম চৌধুরী, ইউএনও নাজমুল হাসান, এসিল্যান্ড মো. ইবনে আল জায়েদ হাসান, কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম খলিল, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ শাহজাহান কামালসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
পুরাণ মতে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ৯ রাত যুদ্ধের পর দশম দিনে জয়ী হন দেবী দুর্গা। এ জন্যই বিজয়া। বিজয়া দশমীর কথাটি শুনলেই মন বিষাদগ্রস্থ হয়ে পরে। কিন্তু এ কথাটাও আমাদের ভুললেই চলবে না যে, এই দিনে মা বিজয়ী হয়েছিলেন, এই মা সফল হয়ে ছিলেন। তবুও এই দিনে মা আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন এ কথা মনে পড়লেই মন অশান্ত হয়ে উঠে। বিজয়া দশমীর তিথিতে মা সকল অশুভ শক্তির বিনাশ করেন এবং সারা বছরের জন্য আমাদের আনন্দে ভরিয়ে রেখে যান। সেই লোকাচার বাংলার ঘরে ঘরে সিঁদুর খেলা হিসেবে পরিণত হয়েছে। সিঁদুর খেলার পাশাপাশি চলে কোলাকুলিও। এ বছর উপজেলায় ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৩৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়।
কচুয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ফনী ভূষণ মজুমদার তাপু ও সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সাহা জানান, এবার কচুয়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ৩৮টি মন্ডপে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সুষ্ঠু, সুশৃংখলভাবে শারদীয় দুর্গা উৎসব সম্পন্ন হওয়ায় উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, আনসার বাহিনী, সাংবাদিকবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন।
উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান এক্য পরিষদের সভাপতি প্রাণধন দেব ও সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তুষ পোদ্দার জানান, ৩৮ টি মন্ডপে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী দিনগুলোতেও সকল জাতীগোষ্ঠীর সহযোগীতায় শান্তিপূর্ণভাবে এ উৎসব পালনে সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন।