• বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ০৬:২৮ অপরাহ্ন
Headline
শেরপুরের নকলায় বারারচর গ্রাম উন্নয়ন সংগঠনের উদ্যাগে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন নিয়ে স্বৈরাচারের মতো টালবাহানা করছেঃ আমিনুল হক মাথাভাঙা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনীর প্রস্তুতি সভা  মতলব উত্তরে ১৮টি গ্রামে আগাম ঈদ উদযাপন  আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অটিজম শিশুরা আমাদেরই সন্তানঃ ইউএনও আমজাদ হোসেন শ্রীনগরে বেদে পরিবারের শিশুদের মাঝে ঈদের পোশাক বিতরণ দাম কত ভাই দেড় টাকা আড়াই টাকা ? বিরামপুর ভোক্তা সংরক্ষণ আইন অবহিতকরণ বিষয়ক সেমিনার মতলব উত্তরে জমে উঠতে শুরু করেছে কোরবানির পশু হাট

হাইমচরে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে শিক্ষার্থীদের পৌছাতে হয় পরীক্ষাকেন্দ্রে

Lovelu / ২৩৩ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

মোঃ সাজ্জাদ হোসেন রনিঃ

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ঈশানবালা এম.জে.এস উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাইমচরের নীলকমল ইউনিয়নের মেঘনা নদীবেষ্টিত সড়কপথ না থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এম.জে.এস উচ্চবিদ্যালয়টি। এ বিদ্যালয়টিতে ৮০৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। যা প্রত্যন্ত চরঅঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এলাকা থেকে পড়াশোনা করে থাকেন ছাত্র-ছাত্রীরা। এতে করে নৌপথে ট্রলার যোগে সময় বেশি লাগার কারণে এম.জে.এস উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা দিতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে উপজেলা সদর পরীক্ষাকেন্দ্রে আসতে হয়। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা আতংক, হতাশা আর উৎকন্ঠায় ভোগতে হয়। দুর্যোগ আবহাওয়ার কারণে অনেক সময় দেখা যায় মাধ্যমিক পর্যায়ের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে আছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। এমতাবস্থায় অনেক শিক্ষার্থীকে ট্রলার ভাড়া বহন করতে কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।

এম.জে.এস উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদা আক্তার বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা দুই-তিন ঘণ্টা সময় হাতে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাই। আমাদের দূর্গম চর অঞ্চল হওয়ায় যাতায়াত করার মতো যানবাহন থাকে না, নদীপথে ট্রলার যোগে যাতায়াত আমাদের একমাত্র উপায়। অনেক সময় আমরা পরীক্ষা দিতে গিয়ে আতংকিত হয়ে যাই। বাড়ি থেকে দুই-তিন ঘন্টা আগে বের হতে হয়। আমাদের এম.জে.এস উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষা কেন্দ্র হলে আমাদের এত কষ্ট করতে হতো না। আমরা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্ট কামনা করছি। যেনো পরীক্ষার কেন্দ্রটি আমাদের বিদ্যালয়ে হয়।

এম.জে.এস উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী আশরাফুল আলম বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা রকম প্রতিকূল পরিবেশে উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের পরীক্ষা দিতে আসতে হয়। কখনো কুয়াশার সকালে নদীর মাঝে জেগে উঠা চরে আটকে যায় নৌযান। অনেক সময়ে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে পারিনা আমরা। এতে আমাদের পরীক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমাদের সকলের দাবী পরীক্ষা কেন্দ্রটি যাতে নিজ স্কুলে হয়।

ঈশানবালা এম জে এস বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বি এম মান্নাফ বলেন, আমার বিদ্যালয়ে গত বছর এসএসসি পরিক্ষায় ৬৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করছে। চরাঞ্চলে দিন দিন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। এ অবস্থায় স্থানীয় পর্যায়ে পরীক্ষাকেন্দ্র করার জন্য তিন বছর পূর্বে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করা হয়েছিলো। মেঘনার ঢেউ অতিক্রম করে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা ট্রলার যুগে নদী পার হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার মত মন-মানসিকতা থাকেনা শিক্ষার্থীদের। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি মহোদয়ের কাছে অনুরোধ করছি যেনো দ্রুত ঈশানবালায় একটি পরিক্ষা কেন্দ্র করা হয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এ কে মীর হোসেন বলেন, এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চরাঞ্চলে অবস্থিত। সেখানে কোনো পরীক্ষা কেন্দ্র না থাকায় এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীদের নদী পার হয়ে হাইমচর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি সম্পর্কে জেনেছি এবং উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবগত করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

এই বিষয়ে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার চাই থোয়াইহলা চৌধুরী বলেন, চরাঞ্চলের এত শিক্ষার্থীর এ রকম ঝুঁকি নিয়ে হাইমচরে এসে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি সত্যিই উদ্বেগজনক। বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ভবিষ্যতে চরাঞ্চলে একটি কেন্দ্র দেওয়া যায় কি না, সে চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি এ ব্যাপারে দ্রুত সমাধান আসবে বলে আশাবাদী।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category