আব্দুল মান্নান সিদ্দিকীঃ
শীত আসার পরপরই গ্রাম অঞ্চল গুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয় । ঘরে ঘরে খেজুরের রসে পিঠা, পুলি, পায়েস খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। জামতা,মেয়ে, নাত -নাতনি আসেন নানার বাড়িতে শীতকালীন পিঠা খেতে। শশুর বাড়ির লোকজনরা কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েন।মেয়ে নাত নাতনি ওজামতাকে বিভিন্ন প্রকার পিঠা, পুলি, পায়েস খাওয়াতে এজন্য প্রয়োজন খেজুরের রস।
কালের বিবর্তনে এই ঐতিহ্যবাহী ধারাটি হারিয়ে যেতে বসলেও সে ঐতিহ্য তুলনামূলক কম হলেও তা অব্যাহত রয়েছে গ্রামে।
মুন্সীগঞ্জে শীতের আগমনে খেজুর গাছ চাষে গাছিদের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে।
মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকার খেজুর গাছ চাষী গাছি জনি, এ প্রতিনিধিকে জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরে শীত আগমনের সাথে সাথে আমাদের গাছ কাটার চাহিদা বাড়ছে,তবে আগের মতো সেই পরিবেশ নেই। আগে মাঠে-ঘাটে,রাস্তার পাশে,বাগান বাড়িতে, বাড়ির চারিপাশে,পুকুর পাড়ে,নদীর ধারে,প্রচুর পরিমাণ খেজুর গাছ ছিল।
গাছিরা আনন্দচিত্তে গাছ কাটতেন,প্রচুর পরিমাণ রস সংগ্রহ করে নিজেরা খেতেন,কাঁচা রস বিক্রি করতেন,গ্রামের লোকজনেরা তা ক্রয় করে সংগ্রহ করতেন, বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের এর রস দিয়ে পিঠে পায়েস খাওয়াতে ন।গাছিএলাকার লোকজনদের কাছে বিক্রি করার পরে যে খেজুর রস অবশিষ্ট থাকতো। সে রস বাড়িতে নিয়ে রসকে মাটির চুল্লির আগুনে জ্বালিয়ে বিভিন্ন প্রকার গুড় তৈরি করে,বাজারে বিক্রি করে যে টাকা পেতেন তা দিয়ে সারা বছর তাদের সংসার চলত। বর্তমান সময়ে অনেকেই খেজুরের রস খেতে চান না নিপা ভাইরাসের ভয়ে।
তিনিজানান, তারা সচেতন ভাবে গাছ কর্তন করেন এরপর হাঁড়ির পরিবর্তে প্লাস্টিকের কন্টেনার ব্যবহার করেন এবং গাছের কর্তন অংশটি বাঁশের চটির বেড়া দিয়েএমনভাবে ঢেকে দেওয়া হয় যাতে বাদুর সহকোন পাখি বা অন্য কোন প্রাণী যাতে রস খেতে না পারে।
কালের বিবর্তনে বর্তমানে খেজুর গাছ বিলুপ্তির পথে, শীতকালে তিন -চার মাসে যে খেজুর রস পেয়ে থাকেন এবং যা আয় করেন তা দিয়ে তাদের সংসার কোন রকম চলে। সারাবছর অন্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়।এ কারণে অনেক গাছিই খেজুর গাছ পরিচর্যা ও গাছ কাটার কাজ ছেড়ে দেওয়ায়। অনেক এলাকায় খেজুর গাছ রয়েছে কিন্তু গাছির অভাবে খেজুর
গাছের রস থেকে এলাকার জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে। এরপর ও শীতের আগমন ঘটলে কিছু সংখ্যক গাছি রয়েছেন তারা ছোটে আসেন নিজ পেশায়।