ডেস্ক নিউজঃ
স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। রাত পোহালেই বহু কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ জুন) সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে সেতুটি উদ্বোধন করে গাড়িতে করে সেতুর ওপর দিয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। এ উপলক্ষে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত ও মাওয়া সংলগ্ন উপজেলাগুলোতে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে।
বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েসহ শ্রীনগর, সিরাজদিখান,লৌহজং উপজেলার রাস্তাঘাট ও অলিগলি। এক্সপ্রেসওয়ের পাশের টংগিবাড়ী ও মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন দেখা গেছে। শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় রাস্তার পাশে শোভা পাচ্ছে বড় বড় বিলবোর্ড ফেস্টুন ও ব্যানার। শিমুলিয়া ঘাটে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়েজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানের পাশেও বড় বড় ব্যানার ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জুন) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, শিমুলিয়া-ভাঙ্গার মোড় (বর্তমান জয় বাংলা চত্বর) এলাকায় চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। জয় বাংলা চত্বরে জয় বাংলা ভাস্কর্য নির্মাণ কাজের শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। সেখানে লাগানো হয়েছে ফুল গাছ । ফুল গাছে পানি দিচ্ছেন মালি। পাশেই শোভা পাচ্ছে বিশাল বিশাল বিলবোর্ড।
পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে মন্ত্রী, এমপিসহ সরকারি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানস্থলে আসবেন। এই কারণে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের দুই প্রান্ত ও এর সঙ্গে সংযোগ সড়কের কেন্দ্রস্থলকে প্রচার-প্রচারণার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ে ছাড়াও রাস্তা নির্মাণের কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনী, সেতু বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তর ও এই অঞ্চলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ শ্রীনগর, সিরাজদিখান, লৌহজং ও ঢাকার দোহার, নবাবগঞ্জ উপজেলার নেতাকর্মীদের দেওয়া বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে চায়ের দোকান, হোটেল, সেলুন, সরকারি-বেসরকারি অফিস, ক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে। ক্ষণ গণনা চলছে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের আর কত সময় বাকি আছে। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণও চান এই মহেন্দ্রক্ষণের অংশীদার হয়ে ইতিহাসের সাক্ষী হতে।
এ ব্যাপারে লৌহজং উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাসেল হোসেন নিরব বলেন, শত প্রতিকূলতা ও বাধা পেরিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ফসল। পদ্মা সেতুকে ঘিরে ২১ জেলাসহ আজ লৌহজংয়ের আনাচে কানাচে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।
শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণব কুমার ঘোষ বলেন, পদ্মা সেতু সারা দেশের মানুষের স্বপ্ন। পদ্মা সেতুর উত্তর প্রান্তে শ্রীনগর উপজেলা সবচেয়ে কাছে। এ কারণে সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে এই অঞ্চলের মানুষের উচ্ছ্বাস উদ্দীপনা উপচে পড়ছে।
লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ শিকদার বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র লৌহজং উপজেলার মানুষের ঘরে ঘরে আনন্দের বন্যা বইছে। সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে শিমুলিয়া পুরান ঘাট এলাকায় আতশবাজি উৎসব হবে। এছাড়া শিমুলিয়া ঘাট এলিকায় তিন দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মাহী বি. চৌধুরী বলেন, পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও চ্যালেঞ্জের সুফল। সেতুর উত্তর প্রান্তের সবচেয়ে কাছের উপজেলা হচ্ছে শ্রীনগর ও সিরাজদিখান। ইতোমধ্যে সেতুকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সুফল পাচ্ছে শ্রীনগর-সিরাজদিখান উপজেলাবাসী। দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে পদ্মা সেতুর কারণে সংযোগ স্থাপনের মধ্য দিয়ে এই দুই উপজেলার উন্নয়নের গতি আরও বেগবান হবে।
মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি বলে শেষ করা যাবে না। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, যাদের দেশপ্রেম আছে যারা দেশকে ভালোবাসে তাদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। নদী দ্বারা দ্বিখণ্ডিত দেশটি পদ্মা সেতুর মাধ্যমে একটি ভূখণ্ডে পরিণত হবে এ নিয়ে মানুষের মনে উচ্ছ্বাস এবং উল্লাস বয়ে যাচ্ছে। পদ্মা সেতুর জন্য এ অঞ্চলের মানুষ তাদের চৌদ্দপুরুষের ভিটা ছেড়ে দিয়েছে। বাঙালি পদ্মা সেতুর মাধ্যমে আরেকবার আজ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।