• বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন
Headline
শ্রীনগরে মুষলধারে বৃষ্টির ফলে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী ফুলছড়ি’তে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ লটারি কার্যক্রম স্থগিত মতলব উত্তরের আলোচিত জুয়েল হত্যা মামলায়  পাঁচ আসামির ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন উত্তরায় গণধোলাইয় দিয়ে আদম বেপারীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ  অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো গড়ে উঠলে ব্যবসা ও অর্থনীতি জীবন ফিরে পাবেঃ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন নকলার পাঠাকাটায় ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলা অনুষ্ঠিত মতলব উত্তরে যুবক নিখোঁজঃ মুক্তিপণ দাবি  ফুলছড়িতে পার্টনার কংগ্রেস কর্মশালা অনুষ্ঠিত গাইবান্ধার ফুলছড়িতে এনটিভির ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটা ও আলোচনা সভা  ৪৪ তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে ১১ তম মতলব উত্তরের রিয়াজ উদ্দিন 

সিরাজগঞ্জে শীতে ভাপা পিঠার কদর বেড়েই চলেছে 

Lovelu / ২৯২ Time View
Update : বুধবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২৩

জি,এম স্বপ্না:

যমুনা নদী পাড়ের জেলায় মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় সিরাজগঞ্জে জেঁকে বসেছে কনকনে শীতের তীব্রতা। ফলে হাড় কাঁপানোশীতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ৯টি উপজেলাসহ চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া নিম্ন-আয়ের মানুষ।

এদিকে, শীত বাড়ায় উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার, ফুটপাতে গড়ে ওঠেছে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। কেউ খুব সকালে, কেউবা বিকেলে আবার কেউ কেউ সন্ধ্যায় দোকান বসিয়ে পিঠা বিক্রি করছেন। শীত মৌসুমকে কেন্দ্র করে পিঠা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন মৌসুমী পিঠা বিক্রেতারা। এতে কদরও বেড়েছে এ সকল দোকানের।

সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে চিতই ও ভাপা পিঠার দোকান। আর সেই পিঠার স্বাদ নিতে দোকানে ভিড় জমান সব শ্রেণির মানুষ। পুরুষদের পাশাপাশি অনেক নারীও দোকানে পিঠা বিক্রি করছেন। এর মাধ্যমে তারা বাড়তি আয় করতে পারছেন। অন্যদিকে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে ধুম পড়েছে হরেক রকমের পিঠা বানানোর।

বুধবার (১৮ জানুয়ারী) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শহরের খলিফা পট্টি, মজিব সড়ক, কালিবাড়ী, চান্দ আলী মোড়, বাজার স্টেশনে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমান পিঠার দোকান। এসব দোকানে ভাপা, চিতই, তেলের পিঠাসহ নানান বাহারী পিঠা বানানো হচ্ছে। প্রতিটি পিঠার দাম ১০ টাকা। তবে মৌসুমী পিঠা বিক্রেতারা বেশীর ভাগই দিনাজপুর, সিলেট, কুষ্টিয়া, রংপুর ও ঠাকুরগাঁসহ আশপাশের জেলার।
প্রতি মৌসুমে ৫০ থেকে ৬০ জন সিরাজগঞ্জে আসে পিঠা বিক্রির জন্য।

সাধারণত ভাপা পিঠা ও চিতই পিঠা ১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তার মধ্যে ভাপা পিঠা তৈরি করতে প্রয়োজন চালের গুঁড়া, নারিকেল কুরানো, খেজুর গুড়, লবণ, সামান্য পানি দিয়ে গোলাকার এ পিঠার জন্য ছোট ২টি বাটি, ২ টুকরো পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে ফুটন্ত পানির ধুয়া ২/৩ মিনিট দিয়ে তৈরি করা হয় ভাপা পিঠা। প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন। এ থেকে খরচ বাদে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা লাভ হয়।

সরিষা, ধনেপাতা, শুটকি ভর্তা মাখিয়ে সুস্বাদু চিতই পিঠা খাচ্ছে কিশোর কিশোরীসহ বয়োবৃদ্ধরা। এই পিঠার স্বাদ পেতে রিক্স-চালক, দিনমজুর, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী সব শ্রেণি-পেশার মানুষই পিঠার দোকানে ভিড় করছে। অনেকে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে সন্ধ্যায় পিঠা নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে।

শহরের কাঠেরপুল এলাকার মৌসুমী পিঠা বিক্রেতা ফরহাদ আলী বলেন, আমি গরমের সময় দিনমজুরির কাজ করি। শীতে পিঠার চাহিদা বেশী থাকায় শীত মৌসুমে পিঠা বিক্রি করি। আয় ভালই হয়, পরিবার পরিজন নিয়ে ভালই আছি।

শহরের স্বাধীনতা স্কয়ার চত্ত্বর এলাকার পিঠা বিক্রেতা শেফালী বেওয়া বলেন, আমি বাসা বাড়ীতে কাজ করি। কিন্তু শীতে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। তাই শীত এলেই পিঠা বিক্রি করি। এবার শীত বেশি হওয়ায় পিঠার চাহিদাও বেশি হয়েছে।

শহরের মুজিব সড়কের পিঠা কিনতে আসা আব্দুল মজিদ সরকার বলেন, উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কনকনে শীতের ঠান্ডা বাতাসে গরম গরম পিঠা খেতে খুব মজা। আমি তিনটা খেয়েছি পরিবারের জন্য ১০টা নিয়ে যাচ্ছি।

পিঠা খেতে আসা স্কুল ছাত্র নীরব হোসেন ও আশিক বলেন, প্রতিদিন চপ, শিঙ্গাড়া, পুড়ি খেতাম। শীত আসার পর থেকে প্রতিদিন ভাপা ও চিতই পিঠা খাই। শীতে ভাপা ও চিতই পিঠা খেতে খুব মজা।

রিক্সা চালক আব্দুল কুদ্দুস মিয়া বলেন, কয়েকদিনের কনকনে শীতের মধ্যে রিক্সা চালানো ভুবই কষ্টকর, তাই একটি গরম গরম চিতই পিঠা খেয়ে শরীরটা গরম করার চেষ্টা করছি।

সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ সুর্য্য জানান, শীত আসলেই অনেক দুর-দুরান্ত
জেলা থেকে মৌসুমী পিঠা বিক্রেতারা প্রতি বছর এই জেলা আসে। তাদের পিঠাগুলো অনেক সুস্বাদু। মাঝে মাঝে আমিও পরিবারের জন্য এই পিঠাগুলো নিয়ে থাকি। ভ্রাম্যমান এই দোকানগুলো প্রতিটি উপজেলার গুরুত্বপুর্ণ স্থান ও রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

সিরাজগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. রামপদ রায় বলেন, পথে ঘাটে অনেক পিঠার দোকান বসে। দোকানদার অবশ্যই দু’হাত ধুয়ে পিঠা তৈরি করবেন। ক্রেতারা হাত ধুয়ে পিঠা খাবেন। কখনোই পচা ও বাসি খাওয়া উচিত নয়। এতে গ্যাস্ট্রিকসহ ডায়রিয়া হতে পারে। এজন্য সকলকে সচেতন থাকার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category