• মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:২৯ পূর্বাহ্ন

হারিয়ে যাচ্ছে -১

মতলব উত্তরে খাল-বিল ও ডোবা-নালায় মাছ ধরার উৎসব হারিয়ে যাচ্ছে

Lovelu / ৩৪৯ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০২২

শহিদুল ইসলাম খোকন  :

এক সময় গ্রাম বাংলায় খাল-বিল ও ডোবা-নালায়  মাছ ধরা হতো। মাছ ধরার চিরায়ত সে দৃশ্য সচরাচর এখন আর চোখে পড়ে না। দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে এসব উৎসব। 

বন্ধু ও সহপাঠীদের নিয়ে  ডোবা নালায় এসব স্থানে আটকা পড়ে থাকা নানা দেশীয় মাছ। আর সে সময় কাদা পানিতে নেমে হাত দিয়ে মাছ শিকার করত গ্রামের মানুষ।

মতলব উত্তর উপজেলায় খাল বিল ও ডোবা নালার  আয়তন অনেকটাই ছোট হয়ে আসছে। তারপরও অতি বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি পায় পুকুর-ডোবা আর খাল-বিল ডুবে যায়, ধানী জমি আর নিচু জমি। পানির সাথে সেই জমিতে দেশি জাতের নানা মাছের আগমন ঘটে।

একসময় খাল-বিল, পুকুর-ডোবা আর ক্ষেত-খলা শুকিয়ে এলে থালা-বাটি দিয়ে চলে সামান্য পানি সেচের কাজ। আর পুকুর-ডোবার পানি সেচা হয় পাম্প মেশিন দিয়ে। এরপর চলে মাছ ধরার উৎসব।

 রীতিমতো আনন্দ উল্লাস করে লোকজন পুকুর-ডোবা, খাল-বিলের শূন্য পানির কাদার ভেতরে হাত ঢুকিয়ে তুলে আনে একের পর এক মাছ। সেচ দেয়া পুকুরে চাষ করা মাছের পাশাপাশি পাওয়া যায় দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ। আর ডোবায় মেলে শোল, টাকি, পুঁটি, খলসে, কৈ, মাগুর, শিং, ট্যাংরাসহ দেশি প্রজাতির বিভিন্ন মাছ।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর বর্ষাকাল শেষ হলে পানি কমে গেলে এই এলাকার নিচু জমিগুলোতে এমন মাছ ধরার উৎসব চলে। সেই উৎসবে মাছ ধরায় মেতে উঠে নারী-পুরুষ, ছেলে-বুড়ো সবাই। কাদা পানিতে নেমে কে কতো বেশি মাছ ধরতে পারে, এই নিয়ে চলে অলিখিত প্রতিযোগিতা।

তারা জানান, আগে এমন করে নানা জাতের দেশীয় মাছ প্রচুর ধরা গেলেও এখন আর সেদিন নেই। নেই মাছের সে প্রাচুর্য। প্রতিনিয়ত মাছের অভয়ারণ্য কমে যাওয়ায় আগের মতো জমে ওঠে না মাছ ধরার উৎসব। দেশীয় মাছের উৎসগুলো ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছে।

আক্ষেপ করে ব্রাহ্মণচক গ্রামের  শহিদ উল্লাহ প্রধান বললেন, খাল-বিল থেকে দিন শেষে মাছ নিয়ে বাড়ি ফেরার দৃশ্য এখন তেমন চোখে পড়ে না। আবার পাঁচ মিশালী মাছের রান্নার ঘ্রাণও এ মৌসুমে এখন আর আগের মতো ছড়িয়ে পড়ে না গ্রামের বাড়ি বাড়ি।

খাদ শুকানোর সময় গ্রামের মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি আসত, কত না মজাই হতো- আজ হারিয়ে যাচ্ছে এসব উৎসব।

সাংবাদিক  ও মানবাধিকার কর্মী শামসুজ্জামান ডলার ও মাহবুব আলম লাভলু বলেন, দিনদিন সরকারি খালগুলো বন্ধ করে অবৈধ স্থাপনা করা হয়েছে । যার কারণে আমাদের দেশি মাছগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত খালগুলো রক্ষা করা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category