• সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
Headline
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ মুন্সিগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি গঠন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করলেন এ্যাড.অন্তরা সেলিমা হুদা শ্রীনগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্টি দুর্যোগে সম্পদ নষ্ট ও জীবনহানির ঘটনা ঘটে…ইউএনও একি মিত্র চাকমা বিরামপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত আমরা কোন রকম ধর্মীয় গোঁড়ামি বরদাশ্ত করবো না… ড. মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন দুইদিন পর ভেসে উঠল মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মুন্সিগঞ্জ শ্রীনগরে বৃদ্ধাকে কুপিয়ে যখম মতলব উত্তরে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন বিএনপি নেতা ডা. শামীম সরকার সব ধর্মের মানুষ আমরা এক পরিবারের মত : তানভীর হুদা

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সোচ্চার হতে হবে

admin / ১৭৬ Time View
Update : বুধবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২২

আমাদের এই পৃথিবী নামক গ্রহটিতে জীবের বাস। এই পৃথিবীতে বাস করে হাজারো প্রাণী। ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্তর প্রতিটা প্রাণীর পদচারণে পৃথিবীটা বৈচিত্র্যময় করে তুলছে। মানুষ, প্রাণী ও প্রকৃতি মিলিয়েই আমাদের পৃথিবী নামের সবুজ গ্রহটি। মানুষ এটিকে এতোটাই নির্দয়ভাবে ও নির্বিচারে ব্যবহার করছে। বর্তমানে সমস্ত বিশ্বব্যবস্থাই হুমকির দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের কারণ হিসেবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক সম্পদের মাত্রাতিরিক্ত আহরণ, জলাভূমি ভরাট, নদীর নাব্যতা হ্রাস, কৃষিতে অপরিকল্পিতভাবে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের যথেচ্ছা ব্যবহার ও নগরায়নকে দায়ি করা হয়। ইটভাটা তৈরি, অপরিকল্পিতভাবে মোটরযান বৃদ্ধি, শিল্প-কারখানার বর্জ্য নিক্ষেপের মতো কারণও কম দায়ী নয়। এসবই জীববৈচিত্র্যকে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ ধারাবহিকতা চলতে থাকলে আমাদের দেশ একসময় অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হবে।

বন্যপ্রাণী হুমকির মুখে পড়ছে বলে দাবি করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। চলতি বছরের আন্তর্জাতিক বন দিবস উপলক্ষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি জানায়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসাবে বাংলাদেশে বার্ষিক বন উজাড় হওয়ার হার বৈশ্বিক গড়ের প্রায় দ্বিগুণ, ২ দশমিক ৬ শতাংশ। গত সতেরো বছরে বাংলাদেশে প্রায় ৬৬ বর্গকিলোমিটার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রেইন ফরেস্ট ধ্বংস করা হয়েছে, যা উদ্বেগের। আর বন বিভাগের হিসেবে সারাদেশে দখল হয়ে গেছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫৩ একর বনভূমি। এরমধ্যে ১ লাখ ৩৮ হাজার একর সংরক্ষিত বনভূমি।
টিআইবি বলছে, বনকেন্দ্রিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও বনের জমি জবরদখলের মাধ্যমে বন ধ্বংসের বহুমুখী ঝুঁকি তৈরি করা হয়েছে। বনের জমিতে অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা, বনের আশেপাশের জমি সরকারি ও বেসরকারি শিল্প-কারখানা এবং স্থাপনা তৈরিতে বরাদ্দ প্রদান। এসবই হচ্ছে দেশের বন ধ্বংসের অন্যতম কারণ। এতে বনজ সম্পদ ও বনভূমির অবক্ষয় ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বন্যপ্রাণী হুমকির মুখে পড়েছে। যা জীববৈচিত্র্য ধ্বংসসহ পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বন আমাদের দেশের একটি মহামূল্যবান সম্পদ বিশেষ করে সুন্দরবন সবসময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে মায়ের মত আগলে রাখে।

জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের ক্ষেত্রে নদীর স্বাদু পানির প্রবাহ হ্রাস, লোনা পানির অনুপ্রবেশ ও লবণাক্ততা সৃষ্টি এছাড়া নদীর নাব্যতা হ্রাসও একটি বড় কারণ। আমাদের দেশের জীবের আবাসস্থল নদীগুলোকে গলাটিপে হত্যা করেই চলছে। দেশের নদী গবেষকরা বলছেন, শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত অন্তত ২৮টি নদ-নদী দখল আর দূষণের শিকার হয়ে এখন মৃতপ্রায়। রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীর বেহাল দশা। ধলেশ্বরী, ব্রহ্মপুত্র, লৌহজং, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, কীর্তনখোলাসহ অনেক নদী নাব্যতা সংকটে পড়েছে। গবেষকরা বলছে, দেশের প্রায় ২৫০টি ঐতিহ্যবাহী নদ-নদী মরে গেছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জরিপ অনুযায়ী, দেশে এখন জীবিত আছে মাত্র ২৩০টি নদী। সরকার নদীরক্ষায় গভীর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস বাংলাদেশের প্রেক্ষপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে এটি সারাবিশ্বে পালিত হলেও প্রতিটি দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ স্বতন্ত্র হওয়ার কারণে এক্ষেত্রে কার্যপদ্ধতিটিও কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবসের ধারণটির সূচনা হয় ১৯৯২ সালে। রাষ্ট্র, সরকার ও সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে ব্রাজিলের রিও-তে ‘শীর্ষ ধরিত্রী সন্মেলন’ জীববৈচিত্র্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সন্মিলিতভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সুস্থ ও টেকসই পরিবশে রক্ষার লক্ষ্যেই এ ধরনের একটি দিবস পালন করা জরুরি। প্রথম দিকে ২৯ ডিসেম্বর তারিখটি বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস হিসেবে পালিত হলেও ২০০১ সাল থেকে এটি প্রতিবছর ২২ মে দিবসটি পালিত হয়। দিবসটি পালনের মাধ্যমে আমাদের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতন হতে হবে; দেশের প্রত্যেকটি নাগরিককে সোচ্চার হতে হবে। কারণ দেশ আমার-আপনার সকলের। তাই আসুন জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই।

লেখক : শিক্ষার্থী, বাংলা বিভাগ, ঢাকা কলেজ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category