মোঃ সাজেদুল ইসলাম, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা):
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত গতকাল রবিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। হিসাব মহানিয়ন্ত্রক এর নির্দেশে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি সাদুল্লাপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন রংপুরের ডেপুটি ডিভিশনাল কন্টোলার অব একাউন্স মোঃ রফিকুল ইসলাম খাঁন। অন্য দুই সদস্য ছিলেন, গাইবান্ধা জেলা নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শাহজাহান আলী এবং অডিটর হায়দারুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৪ এপ্রিল সাদুল্লাপুর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শত ২৮ জন শিক্ষক উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘হিসাব মহানিয়ন্ত্রক’ বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী উপজেলার মন্দুয়ার টুনিরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক জানান, বিগত ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার পেনশন ও গ্রাচুয়েটির টাকা প্রদান করা হয় নাই। উপজেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ টাকার জন্য তিনি দুই বছর থেকে ঘুরছেন। কিন্তু এই টাকা প্রদানের জন্য তার নিকট দুই লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। তিনি আজ লিখিতভাবে বিষয়টি তদন্ত কমিটির নিকট দাখিল করেছেন।
উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা অনৈতিক ভাবে শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বিভিন্ন ফাইল দিনের পর দিন আটকিয়ে রেখে ঘুষ আদায় ও হয়রানি করেন। তার হয়রানি থেকে রক্ষা পেতেই এই অভিযোগ করা হয়েছে।
উপজেলার শালাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার নানা অনিয়মের তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে যথাযথ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে শিক্ষকবৃন্দ বেতন ভাতা প্রাপ্তিতে হয়রানি থেকে মুক্ত হবেন। অন্যথায় গোটা উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন বৃহত্তর আন্দোলনে ডাক দিবেন বলে তিনি জানান।
তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন রংপুরের ডেপুটি ডিভিশনাল কন্টোলার অব একাউন্স মোঃ রফিকুল ইসলাম খাঁন জানান, ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে অভিযোগগুলো মৌখিক ও লিখিতভাবে নেওয়া হয়েছে।
এখন হিসাব মহানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে এই তদন্ত রিপোর্ট পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে পরবর্তি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। এসব নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্তে এসেছেন। তদন্ত শেষে সঠিক রিপোর্ট দাখিল করলেই তিনি ন্যায় বিচার পাবেন বলে আশাবাদী।