মোঃসৈকত জামান (প্রিন্স):
সাঘাটা-ফুলছড়ি ৩৩-গাইবান্ধা ৫ আসনের উপনির্বাচনে মাঠে সক্রিয় প্রার্থীরা।তৎপর তাদের কর্মী, সমর্থকেরাও। তবে যাদের নিয়ে এ আয়োজন সেই ভোটারেরা নীরব। ভোট নিয়ে কোন আগ্রহ নেই সাঘাটা ফুলছড়িবাসি। এমন নিরুত্তাপ ভোটের মাঠে সরকারি দল আওয়ামী লীগ এবং মাঠের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারা ও দুই স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ভোটারদের মন জয়ে মাঠে নেমেছেন।
আগামী ৪ জানুয়ারি ভোট গ্রহন। সেই হিসাবে ভোটের বাকি আর মাত্র ১৪ দিন। তবে সাঘাটা-ফুলছড়ি এই উপনির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মাতামাতি থাকলেও সধারণ মানুষের মধ্যে কোন উৎসাহ নেই। কোথাও নেই ভোটের হাওয়া।
গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি-সাঘাটায় ভোট নিয়ে এমন অনাগ্রহ আগে কখনো দেখা যায়নি। কথা হয় কয়েকজন ভোটারের সাথে। তারা বলছেন, ভোট নিয়ে তাদের কোন উৎসাহ নেই। নিকট অতীতেও দেখা গেছে ভোট মানে উৎসবের আমেজ। উত্তাপ উত্তেজনা টানটান। এখন চিত্র পাল্টে গেছে। সাধারণ মানুষকে ভোট এখন নাড়া দেয় না। ভোটার ছাড়াই ভোট হয়ে যায়। সময়ের আগে বাক্স ভরে যায়। এবার এ আসনে ভোট হবে ইভিএমএ। এই যন্ত্র নিয়েও সাধারণ ভোটারা তাদের আপত্তি আর সন্দেহ সংশয়ের কথা জানালেন।ভোটের মাঠে রেফারি নির্বাচন কমিশনের প্রতিও ভোটারদের আস্থা তলানিতে।
তবে প্রার্থীরা ফের কোমড় বেঁধে মাঠে নামছেন। বিশেষ করে সরকারি দলের প্রার্থী তোড়জোড়ের শেষ নেই। ৩ লাখ ভোটারের মধ্যে নির্বাচন কোন উত্তাপ ছড়াতে না পারলেও সরকারি দল ও তাদের অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনে তোলপাড় চলছে। নেতারা সকল ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে তাদের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে আছেন।বিএনপি ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টি (জাপা) বিকল্পধারা উপনির্বাচন কেন্দ্রিক রাজনৈতিক কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে।
তবে এই উপনির্বাচনে বিএনপির কোন প্রার্থী না থাকায় সে দিক থেকে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে জাতীয় পার্টি।
এ আসনে সংসদ সদস্য পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন (নৌকা প্রতিক)।জাতীয় পার্টি (জাপা) প্রার্থী হয়েছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম গোলাম সহিদ রঞ্জু (লাঙ্গল প্রতিক)।
ব্যাপক অনিয়মের কারণে গত ১২ অক্টোবর এই আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ মাঝপথে বন্ধ করে দেয় ইসি। সংবিধান অনুযায়ী, কোনো সংসদীয় আসন শূন্য ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে সেখানে উপনির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে। তবে, দৈব-দুর্বিপাকে ওই সময়ের মধ্যে ভোট করতে না পারলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও ৯০ দিন সময় বাড়াতে পারেন।
ফুলছড়ি-সাঘাটা উপনির্বাচনে অন্য সংসদ সদস্য প্রার্থীরা হলেন-বিকল্পধারার এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম (কুলা প্রতিক) স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব নাইদুজ্জামান নিষাদ (আপেল প্রতীক) স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (ট্রাক প্রতীক)
এ আসনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও নির্বাচনী প্রচারণা নেই তেমন। অনেক ভোটারদের অভিযোগ প্রার্থীদের কেউই ভোট চাইতে না আসায় তারা ভোট দিতে যাবেন না।
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলের রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে এ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
গাইবান্ধা ৫ উপনির্বাচনের রিটার্নির কর্মকর্তা মোঃআব্দুল মোত্তালেব বলেন, গত ৬ ডিসেম্বর থেকে উপনির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শরু হয়েছে চলবে ২ জানুয়ারী পর্যন্ত। প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনেই প্রচার চালাতে হবে। আচরণবিধি মানা হচ্ছে কিনা তা মনিটর করতে কমিশনের বেশ কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ১০টি ও ফুলছড়ি উপজেলার সাতটিসহ মোট ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসন। সাঘাটা উপজেলার ২ লাখ ২৫ হাজার ৭০ এবং ফুলছড়ি উপজেলার ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৩ জনসহ এ আসনটিতে মোট ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৮৩ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৭০ হাজার ১৬০ জন।