ডেস্ক নিউজঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ক্রীড়াক্ষেত্রের সম্প্রসারণ এবং খেলাধুলার মান আরো উন্নত করার জন্য অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘খেলাধুলার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারেন, সেই লক্ষ্যে আমরা সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমরা বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মেলে ধরতে সক্ষম হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল ‘বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২২’ উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন,যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে দেশের সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত অংশগ্রহণে ‘বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২২ এর তৃতীয় আসর’ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ উপলক্ষে ক্রীড়ার সঙ্গে সংশি¬ষ্ট সবাইকে আন্তরক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সারাবছর বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করছি। তৃণমূল পর্যায় থেকে খেলোয়াড় গড়ে তোলার পাশাপাশি ক্রীড়া অবকাঠামো উন্নয়ন করছি। আমরা স্টেডিয়ামগুলোকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি। প্রথম পর্যায়ে ১২৫টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৮৬টি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজ শুাং হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে দেশের অবশিষ্ট ১৭৩টি উপজেলায় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ চলমান রয়েছে। প্রায় ১০০ কোটি টাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের উন্নয়ন কাজ চলমান।’
ইতোমধ্যে কাবাডি ও ভলিবল স্টেডিয়ামের উন্নয়ন, ১৩টি উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ, সারাদেশে ৫৬টি স্টেডিয়াম, ৮টি সুইমিংপুল, ৬টি শুটিং রেঞ্জ, ৭টি ক্রীড়া কমপে¬ক্স নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২৫টি জেলায় টেনিস কমপে¬ক্স আধুনিকায়ন সমাপ্ত হয়েছে। প্রতি জেলায় ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে। বিকেএসপির উন্নয়নেও বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহরে বিকেএসপি নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান খেলাধুলার জন্য ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তিনি ফুটবল খেলতে ভালবাসতেন এবং স্কুল ফুটবল টিমের ক্যাপ্টেন ছিলেন। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা অন্যান্য ক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও সমান গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালেই জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গঠন করেন এবং ১৬টি জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন অনুমোদন করেন। ১৯৭৪ সালে আরো ১৮টি জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশন এবং বিভিন্ন জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে অনুমোদন দেন। ১৯৭৪ সালে ‘বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অ্যাক্ট’ পাস করে আজকের ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ’ গঠন করেন। ১৯৭৫ সালের ৬ আগস্ট ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী ও সংস্কৃতিসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ অনুমোদন দেন। তিনি ক্রীড়াবিদদের তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন, পূর্ব-জার্মানি এবং ভারতে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য প্রেরণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ক্রীড়া খাতসহ অন্য সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড থেমে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে উৎসর্গ করে ‘বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ এর তৃতীয় আসর’-এর এই আয়োজন দেশের ক্রীড়ার উন্নয়ন ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বিগত আসরগুলোর ধারাবাহিকতায় আগামী বছর থেকে পাবলিক ও প্রাইভেট নির্বিশেষে দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে। নারী শিক্ষার্থীরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যেভাবে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রেখেছে, তা আরো বেগবান হবে। অদূর ভবিষ্যতে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হওয়ার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পরিণত হবে- এই প্রত্যাশা করেন তিনি।