• সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:১৮ অপরাহ্ন
Headline
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ মুন্সিগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি গঠন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করলেন এ্যাড.অন্তরা সেলিমা হুদা শ্রীনগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্টি দুর্যোগে সম্পদ নষ্ট ও জীবনহানির ঘটনা ঘটে…ইউএনও একি মিত্র চাকমা বিরামপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত আমরা কোন রকম ধর্মীয় গোঁড়ামি বরদাশ্ত করবো না… ড. মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন দুইদিন পর ভেসে উঠল মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া শিক্ষার্থীর মরদেহ মুন্সিগঞ্জ শ্রীনগরে বৃদ্ধাকে কুপিয়ে যখম মতলব উত্তরে পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন বিএনপি নেতা ডা. শামীম সরকার সব ধর্মের মানুষ আমরা এক পরিবারের মত : তানভীর হুদা

কোরবানী

Lovelu / ৩৭২ Time View
Update : বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২

পবিত্র ইসলাম ধর্মে কোরবানীর ইতিহাস বেশ প্রাচীন।কোরবানী একটি তাৎপর্যপূর্ণ ইবাদত। কোরবানী অর্থ- উৎসর্গ করা, নৈকট্য অর্জন করা, ত্যাগ করা।শরীয়তের পরীভাষায়, নির্দিষ্ট পশুকে একমাত্র আল্লাহ পাকের নৈকট্য লাভের আশায় নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত নিয়মে জবেহ করাই হলো কোরবানী।সর্ব প্রথম হযরত আদম (আ:) এর পুত্র হাবিল ও কবিলকে কোরবানী করার নির্দেশ দেয়া হয়। যদি ও তখনকার কোরবানী পদ্ধতি ছিল ভিন্ন। তখন কোরবানীর পশুর গোস্ত খাওয়ার বিধান ছিলনা। কোরবানীর পশু জবেহ করে মাঠে ফেলে রাখা হতো, যার কোরবানী আল্লাহ কবুল করতেন, আকাশ থেকে আগুন এসে তাঁর জবেহকৃত পশু পুড়িয়ে ফেলত আর যার কোরবানী কবুল হতোনা তাঁর জবেহকৃত পশু মাঠেই পরে থাকত।

প্রথম মানব হযরত আদম (আ:) থেকে শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা:) পর্যন্ত প্রত্যেক নবীর উম্মতের জন্যই কোরবানীর বিধান বলবৎছিল। মহানবী (সা:) এর অনুস্বরণে আজও সারাবিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলিরা প্রতি বছর ওই বিধান যথাযথ ধর্মীয় অনুশাসন মেনেই পালন করছেন।আর এর মাধ্যমেই মুসলিম সমাজের প্রভূত কল্যাণ সাধিত হয়। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন, কোরবানী করা পশুর গোশত আল্লাহর দরবারে পৌছায় না, আল্লাহ তাঁর বান্দার ত্যাগ করার মানসিকতায়ই সন্তুষ্ট হন। মুসলিমদের এই বিশ্বাসের উৎস আল কোরআনের সূরা হজ্ব ৩৭ নম্বর আয়াতে উল্লেখ- “আল্লাহর কছে পৌছায় না তাদের (কোরবানী করা পশুর) গোশত এবং রক্ত, বরং পৌছায় তোমাদের তাকওয়া”।ইবনে মাজাহ শরীফের ৩১২৭ নম্বর হাদিসে হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রা:) হতে বর্ণিত আছে, “কতিপয় সাহাবি প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা:)! কোরবানী কী? রাসূলে মকবুল (সা:) বললেন, তোমাদের পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর সুন্নত। সাহাবাগণ বললেন এতে আমাদের কী প্রতিদান রয়েছে?তিনি বললেন, প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেক রয়েছে।হযরত মুহাম্মাদ (সা:) ইরশাদ করেন, কোরবনী হচ্ছে হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর সুন্নত। আবু দাউদ শরীফে এসেছে হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রা:) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি আরজ করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ (সা:)এ কোরবানী কী?মহানবী (সা:) ইরশাদ করলেন, তোমাদের পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর সুন্নত। পবিত্র আল কোরআনের সূরা সাফ্ফাত এর ১০২-১০৫ আয়াতে আল্লাহ তা’য়ালা কোরবানীকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হযরত ইব্রাহীম (আ:) ও হযরত ইসমাইল (আ:) এর ঘটনা বিবৃত করে ইরশাদ করেন, “অত:পর তিনি যখন তাঁর পিতার সঙ্গে কাজ করার মতো বয়সে উপনীত হলেন, তখন হযরত ইব্রাহীম (আ:) বললেন, “প্রিয় ছেলে! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে আমি জবাই করেছি, এখন তোমার অভিমত কী”?তিনি বললেন, “হে আমার পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন, তা বাস্তবায়ন করুন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন”। যখন তাঁরা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করলেন এবং ইব্রাহীম তাঁর ছেলেকে কাত করে শোয়ালেন, তখন আল্লাহ তাঁকে আহ্বান করে বললেন, “হে ইব্রাহীম! তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে! এভাবেই আমি সৎ কর্মপরায়ণদের পুরস্কৃত করে থাকি”। কোরবনী কেবল ইবাদতই নয় বরং ইহা আল্লাহর পক্ষথেকে মেহমানদারীও। ইসলাম ধর্মে বছরে ৫দিন রোজা রাখা হারাম, ঈদুল ফিতরের দিন, ঈদুল আজহার দিন ও এর পরের ৩দিন। এই দিন গুলোতে আমরা আল্লাহর মেহমান। আল্লাহ দেওয়া কোরবানীর পশু আল্লাহর নামে জবেহ করবো এবং তাঁরই মেহমান হয়ে আমরা তা গ্রহণ করবো। ইহাই আমাদের জন্য ওয়াজিব। সাদা চোখে কোরবানির মাধ্যমে নিরীহ পশুকে জবাই করার বিষয়টি দৃশ্যমান হলেও বাস্তবিক পক্ষে এই পশু কোরবানীর মধ্যেই মানুষের জন্য রয়েছে প্রভূত কল্যাণ ও সমৃদ্ধি। শরীয়তে কোরবানীর বিধান বর্ণনায় ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম আহমাদ (রহ:) বলেন, কোরবানী ওয়াজিব। তাদের দলীল হলো- সূরা কাউছারের ২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন “তোমার প্রতি পালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর ও পশু কোরবানী কর”। সুতরাং আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিনের নির্দেশ পালন করা সাধারনত ফরজবা ওয়াজিব হয়ে থাকে। অপরদিকে ইবনে মাজাহ শরীফের ৩১২৩ নম্বর হাদিসে হযরত আবু হুরায়ারা (রা:) হতে বর্ণিত আছে, “ নবী করীম (সা:) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি সামর্থ থাকা সত্ত্বেও কোরবানী করে না সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে”। অত্র হাদিসের ভাষ্যে কোরবানী ওয়াজিব প্রমাণিত হয়। তবে ইমাম মালেক ও শাফেয়ী (রহ:)-এর মতে কোরবানী করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

সকলের জন্যই কি কোরবানী ওয়াজিব? না, সকলের উপর কোরবনী ওয়াজিব নয়। ফতোয়ায়ে শামী এর ভাষ্য মতে, যিকহজ্ব মাসের ১০, ১১ বা ১২ এই তিন দিনের কোন একদিন নেসাব পরিমানের মালিক হলেই কোরবানী ওয়াজিব হবে। নেসাব বলতে যাকাতের নেসাব উদ্দিশ্য। অর্থৎনিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য (খাদ্য,বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিতসা, শিক্ষা ও উপার্জনের উপকরণ ইত্যাদি) ব্যতীত যদি সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য কিংবা তার মূল্য বা সমপরিমান সম্পদ উল্লেখিত দিনে কেহ মালিক হলে তাঁর উপর কোরবানী ওয়াজিব হবে। যাকাতের ন্যায় পূর্ণ এক বছর হাতে থাকা জরুরী নয়। কোন পরিবারে যদি একাধিক ব্যক্তি নেসাব পরিমানের মালিক হয় তাহলে যত জন নেসাব পরিমানের মালিক হবে প্রত্যেকের উপরই কোরবনী ওয়াজিব হবে। আমাদের সমাজে কিছু কিছু পরিবারে দেখা যায়, ছেলে প্রবাসী হাজার হাজার টাকা উপার্জন করে বাড়ীতে পাঠায়, বাবা বেকার, ছেলেই বাবা, মা-কে লালন পালন করে। কোরবানী নিজের নামে না করে সম্মানার্থে বাবা অথবা মা এর নামে করে। অথচ রোজগার করে ছেলে কোরবানী ওয়াজিব ছেলের উপর। এমতাবস্থায়া ছেলের কোরবানী আদায় হবে না। যার উপর ওয়াজিব তার নামে করার পর যে কারো নামে কোরবানী করা যাবে। এমনকি মৃত ব্যক্তির নামেও করা যাবে।ইসলামের সকল ইবাদতের মতো ঈদও আল্লাহর পক্ষ হতে নির্দেশিত। ঈদুল আযহা সম্পর্কে সুনানে আবু দাউদ শরীফের ২য় খন্ডে ৪৮৫ নং হাদিসে এবং সুনানে নাসাঈ শরীফের ২য় খন্ডে ১৭৯ নং হাদিসে বণির্ত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেন, “আমাকে কোরবানীর দিবসে ঈদ উদযাপনের আদেশ করা হয়েছে। আল্লাহ তা এ উম্মতের জন্য নির্ধারন করেছেন”। এক ব্যক্তি আরজ করল ’ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার কাছে শুধু একটি ’মানিহা’ আছে, (অর্থাৎ দুধ পান করার জন্য কেবল একটি পশু আছে)। এখন আমি কি করব?নবী (সা:) বললেন, তোমাকে কোরবানী করতে হবে না। তবে তুমি চুল, নখ, ও মোঁচ কাঁটবে এবং নাভীর নিচের পশম পরিষ্কর করবে। এটাই আল্লাহর দরবারে তোমার পূর্ণ কোরবানী বলে গণ্য হবে।

কোরবানীর পশুর বিধান: শরীয়ত নির্ধারিত যে ছয় ধরনের পশু দ্বারা কোরবানী করা যাবে, তা হলো- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা। এগুলোর সর্বনিম্ন বয়স হতে হবে, উটের পাঁচ বছর, গরু ও মহিষের দুই বছর, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা এগুলোর পূর্ণ এক বছর হতে হবে। তবে যদি ছয় মাসের ভেড়া বা দুম্বা মোট তাজায় এক বছরের মতো মনে হয়, তখন তা দিয়ে কোরবানী করা যাবে। তবে কোরবানীর পশু হতে হবে নিখুঁত, অর্থাৎ লেজ কাটা, কান কাটা, পা ভাঙ্গা, দৃষ্টিহীন ইত্যাদি কোন দোষে দুষিত হতে পারবে না এবং মোটা তাজা হতে হবে। এমন দূর্বল হতে পারবেনা যে, পশুটি নিজে হেঁটে জবেহ করার স্থানে যেতে পারেনা। কোরবানীর যে পশু নির্ধারন করা হবে তা দ্বারা কোন কাজ করানো বা তা দ্বারা কোন উপকার গ্রহণ করা যাবেন। যেমন দান করা, বিক্রি করা, কৃষি কাজে ব্যবহার করা, দুধ ও পশম বিক্রি করা ইত্যাদি কাজ করা যাবেনা। যদি কোরবানীর পশুটি হারিয়ে বা চুরি হয়ে যায় বা মার যায়, আর কোরবনীদাতা যদি এমন বিত্তশালী হয় যে তাঁর উপর কোরবানী দেয়া ওয়াজিব, তাহলে তাঁর জন্য আরেকটি পশু ক্রয় করে কোরবানী করা ওয়াজিব। আর যদি সে এমন হয় যে, তাঁর উপর কোরবানী ওয়াজিব হয়নি। তাহলে তাঁর জন্য আরেকটি পশু ক্রয় করা ওয়াজিব নয়। কোরবানীর জন্য নতুন পশু ক্রয়ের পর যদি হারানো পশুটি ফিরে পাওয়া যায়, তাহলে কোরবানী দাতা যদি গরীব হয় তাহলে তাঁর জন্য দুটি পশুই কোরবানী করা ওয়াজিব। আর যদি ধনী হয় তা হলে যে কোন একটি পশু কোরবানী করলেই চলবে। উট, মহিষ ও গরুতে সর্বোচ্চ সাত শরিকে বা সাত নামে এবং ছাগল, দুম্ব ও ভেরাতে এক নামে কোরবানী করা যাবে। শরীকে কোরবানীর ক্ষেত্রে শরীক সংখ্যা এক থেকে সাত যে কোন সংখ্যা হতে পারে, জোড় বেজোড় সংখ্যায় কোন সমস্যা নেই। কোরবানীর পশুর সাথে আকিকা ও দেয়া যাবে। যেমন কোন ব্যক্তি একটি গরু কিনল, তাতে তিন/চার নামে কোরবানী করল আর দুই/তিন নামে আকিকা করল, এতে কোরবানীর কোন ক্ষতি হবে না। তবে সর্বমোট সাত নামের বেশী হতে পারবেনা। আর আকিকার বিধান হলো ছেলে বাচ্চার আকিকা দুই নাম হতে হবে এবং মেয়ে বাচ্চার এক নামই যথেষ্ট। তবে উত্তম হলো বাচ্চা ভূমিষ্ট হওয়ার ৭/১৪ দিনের মধ্যে আকিকা দেয়া।

কোরবানীর পশু জবেহ ও গোস্তের বিধান: কোরবানীর পশু জবেহ করার পূর্বে যাদের নামে কোরবানী দেয়া হবে তাদের নাম উচ্চাহরন করে পড়া জরুরী নয়, ক্রয়ের সময়ের নিয়তই যথেষ্ট। নিজের কোরবানীর পশু নিজে জবেহ করা উত্তম। জিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আজহার নামাজের পর থেকে শুরু করে ১২ তারিখ সূর্যাস্থ পযর্ন্ত কোরবানীর পশু জবেহ করা যাবে। তবে যে সকল এলাকায় জুমার নামাজ ও ঈদের নামাজ ওয়াজিব নয়,সে সকল এলাকায় ১০ তারিখ ফজর নামাজের পর থেকেই কোরবানী করতে পারবে। নামাজের আগে কেহ কোরবনী করলে তাঁর কোরবানী হবে না। হাদিস শরীফে আছে যে, কোন কোন সাহাবী ভূলক্রমে ঈদের নামাজের আগেই কোরবানী করেছিলেন, নবী (সা:) তাদেরকে পূনরায় কোরবানী করার আদেশ দেন। (বুখারী২/১৭৯, মুসলিম ২/১৫৩। পশু জবেহ বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য দুইটি বিষয়ের প্রতি অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে, অন্যথায় কোরবানী ও জবেহ হালাল হবে না। প্রথম নম্বর হলো, জবেহকারী মুসলিম হতে হবে এবং জবেহ করার সময় “বিসমিল্লাহ” বলতে হবে, বিসমিল্লাহ এর সাথে “আল্লাহু আকবার” যুক্ত করে নেয়া মুস্তাহাব। ইচ্ছাকৃতভাবে “বিসমিল্লাহ” বলা ছেড়ে দিলে জবেহকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। তবে ভূলবশত বিসমিল্লাহ বলা ছেড়ে দিলে তা বৈধ হবে। জবেহ করার সময় জবেহকারীকে কেহ যদি ছুরি চালাতে সাহায্য করে, তাকেও “বিসমিল্লাহ” বলতে হবে। দ্বিতীয় নম্বর হলো, জবেহ করার সময় কন্ঠনালী, খাদ্যনালী ও গলার দুই পাশে থাকা মোটা দুইটি রগ কাটতে হবে। প্রসিদ্ধ ফিকহ এর কিতাব “হেদায়া” কিতাবের ভাষ্য মতে, এই চারটি মোটা রগের মধ্য হতে কমপক্ষে তিনটি রগ অবশ্যই কাটতে হবে। অন্যথায় এই পশুর কোরবানী দুরস্ত হবে না। কোরবানীর গোস্ত কোরবানী দাতা এবং সকলেই খেতে পারবে। সূরা হজ্ব এর ২৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন “অত:পর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং দুস্থ, অভাবগ্রস্তকে আহার করাও”। কোরবানীদাতা চাইলে সব গোস্ত নিজে খেতে পারবে এবং জমা করে রাখতে পারবে অথবা দান করে দিতে পারবে। নবী করীম (সা:) ইরশাদ করেন, “খাও, সংরক্ষণ কর এবং সদকা কর”-মুসলিম ২/১৫৮। কিন্তু কোরবানীর পশুর গোস্ত, হাড্ডি এমনকি চামড়া, ভূড়ি বা চর্বি কোন কিছুই বিক্রয় যোগ্য নয় এমনকি কসাইকেও মুজুরী হিসেবে গোস্ত দেয়া যাবেনা। বুখারী শরীফের ১৭১৬ নম্বর হাদিসে বর্ণিত নবী (সা:) ফরমান “আর তা প্রস্তুত করণে তা থেকে কিছু দেওয়া হবেনা”। ফুকাহায়ে কেরামগণের মতে, কোরবানীর পশুর গোস্ত তিন ভাগ করে একভাগ নিজেরা খাওয়া, একভাগ দরিদ্রদের দান করা এবং একভাগ আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধদের দেয়া মুস্তাহাব।আল্লাহর নৈকট্য ও রেজামন্দি লাভের আশায়, হালাল উপার্জনের টাকায় সর্বোত্তম পন্থায়, অধিক সাওয়াব অর্জন করতে, প্রিয় পশু আল্লাহ নামে কোরবানী করার আমাদের সকলকে আল্লাহ তৌফিক দান করুক। আমিন।
লেখক:

মুফতি মো: এনামুল হক কেশবপুরী

প্রভাষক, সাড়ে পাঁচানী হোসাইনীয়া ফাজিল মাদরাসা
খতিব, উপজেলা কমপ্লেক্স জামে মসজিদ
মতলব উত্তর, চাঁদপুর।
০১৮১৭৫১১১৬৫

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category