মোঃ ইবাদৎ হোসেন,অভয়নগর (যশোর)ঃ
যশোরের অভয়নগরের কৃষি কাজে নারীরা বিশেষ ভাবে অবদান রেখে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। গৃহস্থালির কাজের পাশাপাশি কৃষি খামারে পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে তারা।
সরজমিনে দেখা যায় উপজেলার বনগ্রামের সোনিয়া বেগম নিজেই নৌকা চালিয়ে বিলের মধ্য থেকে ধান কেটে নৌকায় ভরে রাস্তার পাশে নৌকা ভিড়িয়ে ধান নামাচ্ছেন। সনিয়া বেগম জানান তিনি অনেক দিন আগে থেকেই নৌকা চালাতে পারেন। আর বোরো মৌসুমে ধান লাগিয়ে ছিলাম প্রথম বার ভালো ফসল পেয়েছি। ধান কাটার পর আবার দ্বিতীয় বার ধান গাছ হয়ে ছিল তাও কেটে ছিলাম। এবার একই ভাবে তৃতীয় বারের মতো ধানের গাছ গজিয়ে ধান হয়েছে বেশ তাই কেটে আনলাম। সংসার দেখা শোনার পাশাপাশি কৃষি খেত/ খামারে সময় দিয়ে বিশেষ অবদান রেখেছেন এই পরিশ্রমী নারী।
কৃষির উন্নয়ন ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়। আদি পেশা কৃষির সূচনা হয় নারীর হাত ধরেই। ঘরের কাজের পাশাপাশি তারা কৃষিকাজও করে আসছে বহুকাল থেকে। আগে গ্রামীণ সমাজে পুরুষরাই মাঠে কৃষিকাজ করত এবং নারীরা রান্নাবান্না আর সন্তান লালনপালন নিয়েই ব্যস্ত থাকত। বর্তমানে প্রত্যক্ষভাবে কৃষি কাজে এগিয়ে এসেছে নারীরা। তারা পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি উৎপাদন বিশেষ করে রবিশস্য উৎপাদন, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি পালন, সবজি ও মৎস্যচাষ, বনায়ন এসব কাজে নারীরা পুরুষের পাশাপাশি সমান অবদান রাখছে। ফসলের ক্ষেতে ধানের বীজবপন করা থেকে শুরু করে সার দেওয়া, আগাছা দমন, কীটনাশক ছিটানো, ধান কেটে ঘরে তোলাসহ সব কাজই নারীরা করছে স্বাচ্ছন্দ্যে।
অনেকেই আবার বাড়ির পাশে কিংবা উঠানে অনাবাদি জায়গায় শাকসবজি, ফলফলাদির আবাদ করে সংসারে বাড়তি রোজগারের পথ করে নিচ্ছে। এতে পরিবারের খরচ মিটানোর পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও তাদের অবদান দিনে দিনে বাড়ছে।কৃষিকাজে জড়িত বিপুলসংখ্যক নারী শ্রমিকের কোনো মূল্যায়নও করা হয় না। এখনো গ্রামীণ সমাজে কৃষি ও চাষের কাজকে নারীর প্রতিদিনের কাজের অংশ বলে বিবেচনা করা হয়। সেখানে মজুরি প্রদানের বিষয়টি অবান্তর। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নামমাত্র মজুরি দেওয়া হয়। কৃষিতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই নারীদের যথাযথ সম্মান দেওয়া দরকার দেশবাসীর।