নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে ২০০৫ সালের ১৯ শে ফেব্রুয়ারি। চাঁদপুরের মতলবের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দূর্ঘটনা এমভি মহারাজ লঞ্চডুবির আজ ১৭ বছর। ২০০৫ সালের ১৯ শে ফেব্রুয়ারি রাত ১১টায় এম ভি মহারাজ কয়েকশ’ যাত্রী নিয়ে সদরঘাট ত্যাগ করে। রাত সাড়ে ১১টায় বুড়িগঙ্গা নদীতে পাগলা নামক স্থানে ঝরের কবলে লঞ্চটি উল্টে ডুবে যায়। যাত্রীদের বেশির ভাগ ছিল মতলব উত্তর এবং দক্ষিণ এর।
দূর্ঘটনার খবর ছরিয়ে পরলে পুরো মতলবে পরে যায় শোকের মাতম। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে মতলবের আকাশ। একের পর এক লাশগুলি ভেসে আসতে থাকে মতলবের পানে।লঞ্চ ও ট্রলার যোগে লাশগুলো মতলব থানায় এনে জমা করতে থাকে।
জানা গেছে, নিহতের সংখ্যা ছিল ১১২ জন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নিহত হয়েছিল ৩ শতাধিক বেশি। ২০০৬ সালে সরকারিভাবে নিহতদের পরিবারের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে মোট ২৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও ১ মেঃ টন চাল প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তাদের জন্য আর কোনো বরাদ্দ আসেনি।
লঞ্চ দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের মধ্যে ছিল নারায়নপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী, তার কন্যা মতলব কঁচি-কাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী শিলাত জাহান অর্থি, উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল হাই মাস্টার, আইসিডিডিআরবির ডাক্তার মো. মাসুম, দগরপুরের প্রকৌশলী ফারুক দেওয়ান, মতলব বাজারের সার ব্যবসায়ী ইয়াসিন মৃধা, ডেফোডিল ইউনির্ভাসিটির কর্মকর্তা ফরুক দেওয়ানসহ স্বপরিবার, দশপাড়া গ্রামের মফিজুল ইসলম, বাইশপুর গ্রামের ছোট খোকন ও বড় খোকন, মতলব উত্তরের বারহাতিয়া গ্রামের ভাঙ্গারী ব্যবসায়া শাহআলমসহ নাম জানা নাজানা অনেকে। উদ্ধারকৃত লাশগুলো তখন মতলব দক্ষিণ থানার সামনে সারিবদ্ধ ভাবে তাবু টানিয়ে রাখা হয়েছিল।অধিকাংশ লাশের মুখমন্ডল ও শরীর গলে যাওয়ায় তাদের চিনতে আত্মীয়-স্বজনদের হিমশিম খেতে হয়েছিল। লাশের পরনে থাকা পোশাক এবং জন্মগত কোন চিহ্ন দেখে অনেক লাশ সনাক্ত করেছে স্বজনরা। আর যে সকল লাশের কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি তাদের ছবি তুলে তাদের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে ঢাকিরগাঁও রিয়াজুল জান্নাত কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহতদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে পরিবারের সদস্যরা নিজ নিজ উদ্যোগে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে।