হাইমচর (চাঁদপুর)প্রতিনিধিঃ
হাইমচরে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বে, বড় ভাইয়ের মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার ছোট ভাই জহির আহমেদ সবুজ। পৈতৃক সম্পত্তি বন্টন না হওয়ায় ভাইদের মধ্যে প্রায় সময় কথা কাটাকাটি ও বড় ধরনের ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। সামাজিক ভাবে কয়েকবার সালিশি করেও বড় ভাইকে বুঝানো যায় না। তাই ছোট ভাইয়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্নভাবে অত্যাচার করেন আপন বড় ভাই আলী আহম্মদ বেপারী।
তারই সুত্র ধরে স্থানীয় সুশীল সমাজের উপস্থিতিতে একাধিকবার পারিবারিক দেন দরবার হয়। দরবার সালিসি না মেনে বড় ভাই আলী আহম্মদ বেপারী তারই আপন ছোট ভাই জহির আহমেদ সবুজকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করে। সুযোগের অপেক্ষায় থেকে গত ২১ জুন ২০২২ মঙ্গলবার রাত ১০ টায় ছোট ভাই জহির আহমেদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে সে মারাত্মক ভাবে আহত হলে স্থানীয়রা প্রথমে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেফার করে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ২২ জুন মঙ্গলবার বড় ভাই আলী আহম্মদ বেপারী ও তার স্ত্রী সন্তান মিলে প্রায় ৬/৭ জন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে ছোট ভাই জহির আহমেদের ঘরের সামনে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। বড় ভাইকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তার হাতে থাকা দা দিয়ে ছোট ভাই জহির কে আঘাত করে। এতে জহির মাথা সরিয়ে নিলে দায়ের আঘাতে কপাল ফেটে যায়। এরপর থেকে আলী আহমেদ এর স্ত্রী সন্তান মিলে নিরীহ জহিরের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহতাবস্থায় প্রথমে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকেন তিনি।
এ ঘটনাকে ভিন্ন দিকে নিয়ে জহিরকে জেল হাজতে পাঠাতে আলী আহমেদ বেপারীর ছেলে শাহেদ হোসেন মিঠু (২৬) মিথ্যা নাটক সাজায়। কম্পিউটারে এডিটের মাধ্যমে তার হাতে ও মাথায় জখমের চিহ্ন দেখিয়ে আদালতে মামলা করে। আদালতে তার দাখিলকৃত জখমের ছবির সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। আপন চাচাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করে অতর্কিত হামলায় আহত করে নাটক সাজায় ভাতিজা মিঠু। এখন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে আপন চাচা জহিরকে।
স্থানীয়রা জানান, আলী আহমেদ বেপারী একজন দুষ্ট প্রকৃতির লোক। তার স্ত্রী সন্তানও হিংস্র মনোভাবের। তাই তাদের সাথে কেউ মিশেনা, কথাও বলে না। আলী আহমেদ বেপারী পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বারংবার জহিরের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। জহির নিরীহ মানুষ হিসেবে বড় ভাইয়ের সকল অত্যাচার মুখ বুজে হজম করে।
তারা বলেন- গত জুন মাসের ২২ তারিখের ঘটনা গৃহ যুদ্ধকেও হার মানিয়েছে। আলী আহমেদ বেপারী স্ব-পরিবারে জহিরের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। তার নিরাপত্তায় প্রসাশনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে বড় ভাই আলী আহম্মদ বেপারী জানান, আমি সংসারে বড়। নিয়মানুযায়ী বাড়িতে কোনোকিছু করতে হলে আমাকে জানিয়ে করতে হবে। কিন্তু সে পুকুরে মাছ ধরতে নামে আমি জানিনা। আমাকে না বলে বাগানের সুপারি নিয়ে যায়, গাছের ফলফলাদি নিয়ে যায়, জোরপূর্বক বাড়ির অর্ধেক টা সে দখলে নিয়ে গেছে। তবুও আমি কিছুই বলিনি। গত কয়েকদিন আগে সে ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে আমাকে ছেলেকে রক্তাক্ত করেছে। মাথায় আঘাত করেছে। তাই বাধ্য হয়ে আমি প্রশাসনের আশ্রয় নিয়েছি।
সাবেক ইউপি সদস্য বিল্লাল জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের পৈতৃক সম্পত্তি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে একাধিকবার বৈঠক হলেও তা সমাধান করা সম্ভব হয়নি। কয়েকদিন আগে বড় ভাই আলী আহম্মদ বেপারীর নেতৃত্বে তার ছোট ভাই জহিরের উপর অতর্কিত হামলা করে মারাত্মক ভাবে আহত করে। তিনি চিকিৎসা শেষে চাঁদপুর কোর্টে তার ভাই ও ভাতিজাদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
ঐ মামলায় ১ নম্বর আসামি তার বড় ভাই আলী আহম্মদ বেপারীকে কোর্ট জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী জহিরের ভাতিজা বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে যে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে বাড়িতে বা এলাকায় সে ঘটনার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।